ডেক্স প্রতিবেদন
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ৩০০ আসনে দলীয় প্রার্থী দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তরুণদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে দলটি জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথাও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর একক নাকি জোটগতভাবে ভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দলটির অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, বিএনপির সঙ্গে নয়, বরং ডানপন্থী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা বেশি। তবে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত পুরোপুরি দলকে গোছানো এবং নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় মনোযোগ দিচ্ছে এনসিপি। তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি বিচার করে দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা ।
নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে এখনও এনসিপি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনের শর্ত পূরণ এবং সংগঠন বিস্তারে সচেষ্ট। মৌলিক সংস্কার, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিচারের দাবি এবং গণপরিষদ ও আইনসভা নির্বাচনের দাবি সামনে রেখে সমান্তরালে নির্বাচনী প্রস্তুতি চলছে। দলীয় হাইকমান্ড ৩০০ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঠ কাজ চালানোর নির্দেশ দিয়েছে।
দলীয় শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, জুলাই সনদ ঘোষণার পর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের পদ্ধতি নির্ভর করবে রাজনৈতিক পরিবেশ ও নির্বাচনি তফসিলের উপর। এনসিপির নেতারা মনে করেন, জুলাই আন্দোলনের মিত্র ডান ও বামপন্থী দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠন সম্ভব; বিএনপি জোটে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা কম। ইসলামি দলগুলোর শক্তিশালী ঐক্য গঠিত হলে সেদিকেও তাদের নজর থাকবে।
নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণের বিষয়ে এনসিপি কাজ করছে। দলটির কেন্দ্রীয় অফিস চালু, ২২ জেলা ও ১০০ উপজেলায় কার্যকর কার্যালয় রয়েছে এবং গঠনতন্ত্র খসড়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। সাংগঠনিক তৎপরতা সম্পর্কে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত জানান, এখন পর্যন্ত ১৩টি সেল, ১০টি উইং, ৩০ জেলা কমিটি, ১২০ উপজেলা কমিটি ও ২ মহানগর কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, “দল গোছানোর কাজ এখন প্রধান কাজ। নতুন দল হিসেবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে চাই। গঠনতন্ত্রও প্রস্তুত হচ্ছে।”
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মশিউর রহমান জানান, বিচার ও মৌলিক সংস্কারের পর অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত হলে দল নির্বাচনে অংশ নেবে। বর্তমানে তারা নির্বাচনকে ঘিরে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে।
দলীয় নেতৃত্বের প্রত্যাশা, একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন, তরুণদের কর্মসংস্থান, প্রবাসীদের ভোটাধিকার, সামাজিক সাম্য ও সমতা প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে এনসিপি। এছাড়া সারাদেশে বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে অন্তত ৫০টি আসনে দলীয় প্রার্থীরা সক্রিয়তার পরিচয় দিয়েছে।
নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রধান প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম (ঢাকা-১১ ও ঢাকা-৯), সদস্য সচিব আখতার হোসেন (রংপুর-৪), এবং বিভিন্ন অঞ্চলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রধান সংগঠকরা। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন আসন থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে।
দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব বলছে, এনসিপি দেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক সংস্কার ও জনগণের অধিকারের পক্ষে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।