নিজস্ব প্রতিবেদক ।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ফ্রান্স 24 ইংলিশ টেলিভিশনে একটি সাক্ষাৎকার প্রদান করেছেন লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য। দশ মিনিটের সেই সাক্ষাৎকারে পিনাকী ভট্টাচার্য কথা বলেন বাংলাদেশের রাজনীতি, তার রাজনৈতিক কর্মকান্ড, লেখালেখি এবং ইউটিউবিংসহ তার নির্বাসিত জীবন নিয়ে।
এরই মধ্যে তার সাক্ষাৎকারটি আপলোড করা হয়েছে ফ্রান্স ২৪ ইংলিশ টেলিভিশনের ইউটিউবে। সেখানে আপলোডের ১৫ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ৭ লক্ষ মানুষ দেখেছে পিনাকী ভট্টাচার্যের এই সাক্ষাৎকারটি।
টেলিভিশনটির ইউটিউব চ্যানেলটি পর্যবেক্ষণ করেন বোঝা যায়, গত সাত দিনে টেলিভিশনটিতে যত ভিডিও আপলোড করা হয়েছে তার মধ্যে এটি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভিউ পেয়েছে। তাও আবার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে। ধারণা করা হচ্ছে আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেটি এক মিলিয়নে পৌঁছাবে। জানা গেছে এটি দেখে অবাক হয়ে গেছেন টেলিভিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
এদিকে ফ্রান্সে এবং ইউরোপে বসবাসরত বাংলাদেশিরাও পিনাকী ভট্টাচার্যের এই সাক্ষাৎকারটি নিয়ে বেশ গর্ববোধ করছে। এদিকে এই সাক্ষাৎকারটি করার অভিজ্ঞতা তথ্য তুলে ধরেছেন পিনাকী ভট্টাচার্য। কি সেই অভিজ্ঞতা সেটি থাকছে আমাদের এই আয়োজনে।
ভট্টাচার্য তার ফেসবুকে লিখেন, ফ্রান্স ২৪ এ এটা আমার দ্বিতীয় প্রোগ্রাম। প্রথমটা ছিলো ৫ আগষ্ট। তুমুল উত্তেজনার সময়ে, আমি রিপাবলিকে বক্তৃতা দিয়ে ওইখানে যাবার কথা ছিলো একটা সংবাদ পর্যালোচনায় আরো দুইজনের সাথে কথা বলার স্লট ছিলো। সব মিলিয়ে ছয় সাত মিনিট। আমি ভিড়ের চাপে বের হয়ে গাড়ি পর্যন্ত পৌছাতে পারছিলাম না। ঘেমে নেয়ে যখন পৌছালাম তখন শুরু হচ্ছে প্রচার। হুড়মুড়িয়ে ঢুকেছিলাম স্টুডিওতে। খুব একটা ভালো করে খেয়াল করা হয়নি।
আজকে সময় নিয়ে উপস্থিতি। আমাকে বলা হয়েছিলো আমার একটিভিজম আর বই নিয়ে আলাপ হবে। জানিয়ে রাখা হয়েছিলো আমার বাসায় সকালে সাড়ে আটটায় গাড়ি পাঠিয়ে দেবে। গাড়ি এলো তার আগেই। ওদের অফিসে পৌছালাম একজন তরুনী অভ্যর্থনা জানালো। তারপরে আমাকে নিয়ে একটা মেকআপ রুমে ঢুকালো। মেকআপ দিয়ে আমার মাইক্রোফোন ফিট করিয়ে স্টুডিওর সামনে বসিয়ে রাখলো। সময় হলে ঢুকলাম। আমাকে এংকর বসতে ইংগিত করে স্ক্রিনে কথা বলতে থাকলো। কথা শেষ করে কয়েক সেকেন্ড বিরতি নিয়ে বললো এইবার তুমি লাইভ হবে। চারিদিকে ডিজিটাল স্ক্রিন। নানা ভিডিও চলছে। ইমেজ আসছে। একটা মুল ক্যামেরা, এই মুল ক্যামেরার সাথে টেলিপ্রম্পটার সাথে আরো তিন চারটা ক্যামেরা। কোথাও ক্যামেরাম্যান নেই ক্যামেরাগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে নড়াচড়া করছে পজিশন বদলাচ্ছে। আলোগুলোও নিজেরাই ফোকাস করে নিচ্ছে। প্রশ্নের মধ্যেই দেখলাম বিশাল স্ক্রিনে আমার ইউটিউবের ভিডিও চলছে। কথা বলতে বলতে বড় স্ক্রিনে ময়ুখ চৌধুরীর ভিডিও দেখে আমি মোটামুটি বিষম খেলাম। হাসিও এসেছে কিছুটা ডিস্ট্রাক্টেড হয়েছি কথা বলতে বলতে। বুঝলাম ওই স্ক্রিনের দিকে তাকানো যাবেনা।
এইরকম স্টুডিও বাংলাদেশে ছিলোনা আমি যখন বাংলাদেশে। এখন হয়েছে কিনা জানিনা।
যাই হোক, প্রশ্ন উত্তর শেষ হলে, সঞ্চালক অন্য বিষয়ে গেলো। আমি বুঝতে পারছিলাম না আমি কী করবো উঠবো কিনা। আমাকে হাত দিয়ে ইশারা করলো সঞ্চালক বসে থাকতে। একটু পরে উনার কথা বলা শেষ হলে, স্ক্রিনে যখন অন্য ভিডিও চলতে শুরু করলো তখন উঠে এসে আমাকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন। তখন স্ক্রিনে অন্য কোন ভিডিও চলছে। আসার সময়েও দুয়ারে প্রস্তুত গাড়ি। ফ্রান্স ২৪ কাউকে খাম দেয়না। বিশাল বড় বিল্ডিং চারটা ভাষায় সম্প্রচার হচ্ছে রাতদিন, ফ্রেঞ্চ, আরবি, ইংরেজি আর স্প্যানিশ। কতোগুলো স্টুডিও আছে আল্লাহই মালুম। বের হবার সময়ে দেখলাম এই স্টুডিওর পিছনে যেই রুম থেকে সবকিছু চলানো হচ্ছে সেইখানে আট দশজন কাজ করছে বিশাল বিশাল প্যানেলের সামনে।
অভিজ্ঞতাটা দরকার ছিলো। আশা করি এটা শুরু। আরো ডাক পাবো আন্তর্জাতিক গনমাধ্যমে। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে।
তবে স্টুডিওতে বসার চেয়ারটা খুব ভালো না। স্বস্তিকর না বসাটা।