মির্জা ফখরুলের জন্মদিনে বড় মেয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:৫০ পূর্বাহ্ণ
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:৫০ পূর্বাহ্ণ

দ্য পলিটিশিয়ান ডেক্স ।।।

আজ ২৬ জানুয়ারি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জন্মদিনে তাকে নিয়ে লিখেছেন মেয়ে শামারুহ মির্জা। রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দেন তিনি।

শামারুহ লেখেন, ‘আমরা দুই বোন যখন ছোট্ট ছিলাম, আমার বাবা চাকরি ছেড়ে পুরো পরিবারকে ঢাকায় ফেলে ঠাকুরগাঁয়ে চলে যান। এক-দুই দিন না, বছরের পর বছর আমরা বড় হয়েছিলাম বাবাকে কাছে না পেয়ে, কারণ তিনি চেয়েছিলেন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করবেন।’‘খুব কঠিন ছিল আমাদের বড় হওয়া। আমরা কষ্ট পেয়েছি, বিরক্ত হয়েছি কিন্তু আমার বাবাকে কোনোদিন নিরাশ হতে দেখিনি।

আমরা টুক টুক করে বড় হলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছি, পিএইচডি করেছি, চষে বেরিয়েছি পৃথিবী। প্রায়ই ভাবি, আমার বাবাও শিক্ষক ছিলেন, তার জন্যেও আমার এই জীবনটা সম্ভব ছিল। কিন্তু তিনি কঠিনকে ভালোবেসেছিলেন আপনাদের জন্য। সত্যিই বলছি। আপনাদের জন্য।’‘মির্জা আলমগীর এই ৭৭ বছরেও হতোদ্যম হননি। তাকে জেলে পাঠানো হয়েছে ১২ বার, আওয়ামী হামলায় আহত হয়েছে, হাসিনা ক্যাডাররা তার চরিত্র হত্যার চেষ্টা করেছে, এখন তাকে বাংলাদেশে উগ্রপন্থীদের লক্ষ্যবস্তু তৈরি করা হয়েছে।

শরীরটাও ভালো না। আমি তার মেয়ে- আমার দুশ্চিন্তার কোনো শেষ নেই। জিজ্ঞেস করলেই আব্বু বলে, লড়াই আমাদের করতেই হবে শেষ পর্যন্ত। মির্জা আলমগীর বাসায় আমাদের যা বলেন, যে ভাষায় বলেন, আপনাদেরও ঠিক তাই বলেন – মন থেকে বলেন। তার চেহারা একটাই।’‘মির্জা আলমগীর প্রতিশোধের জন্য রাজনীতি করেননি। তিনি শুধু একটাই জিনিস চেয়েছেন সারা জীবন- গণতন্ত্র, সাধারণ মানুষের উন্নতির রাজনীতি।’

 
শামারুহ আরও লেখেন, ‘বাংলাদেশের আজকের পরিস্থিতিটা খুবই সহজ আসলে, আপনি যদি চিন্তা করেন। হয় আপনি সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারের পক্ষে, হয় আপনি ইনসাফের পক্ষে, না হয় আপনি বিনা বিচারে মানুষকে হত্যার পক্ষে, রামদা আর হাতুড়ির, ফ্যাসিজমের পক্ষে।’‘ক্লিশে মনে হতে পারে কিন্তু আব্বুর সারা জীবন না হলেও অন্তত আমার সারা জীবনটুকু তিনি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্যেই দিয়েছেন। মানুষটা তার যৌবন দিয়েছেন এই দেশের সাধারণ মানুষের জন্য, এই শেষ বয়সে এসে গণতন্ত্রের জন্য লড়ছেন। দৃঢ় সংকল্পে দাঁড়িয়ে আছেন।’


১৯৪৮ সালের এই দিনে ঠাকুরগাঁওয়ে জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ষাটের দশকে মির্জা ফখরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (পরে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন) সদস্য ছিলেন তিনি। এরপর সংগঠনটির এসএম হল শাখার সাধারণ সম্পাদকও নির্বাচিত হয়েছিলেন। ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের সময় তিনি সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন।ঢাকা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন মির্জা ফখরুল।

নব্বইয়ের দশকে শিক্ষকতা ছেড়ে মূলধারার রাজনীতিতে আসেন তিনি। ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মির্জা ফখরুল। এরপর প্রথমে কৃষি এবং পরে বেসরকারি বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।২০১১ সালে বিএনপির মহাসচিব খন্দকার দেলওয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর প্রথমে তিনি দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হন।

এরপর ২০১৬ সালে বিএনপির মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। এর আগে তিনি দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন।২০১৮ সালের নির্বাচনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার একটি আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মির্জা ফখরুল। কিন্তু সংসদে যোগ দেননি তিনি। তবে দলের বাকি নির্বাচিতরা শপথ নেন।মির্জা ফখরুল দুই মেয়ে রয়েছেন। বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় কর্মরত রয়েছেন। ছোট মেয়ে মির্জা শাফারুহ একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন।