জামায়াতের রাজনৈতিক নিয়মনীতি কি শিথিল হচ্ছে ?

প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৮ অপরাহ্ণ
প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৮ অপরাহ্ণ

জামায়াতের প্রতি পজিটিভ লোকজনকে দলে ভেড়াতে দলের নিয়মনীতি কি শিথিল করা হচ্ছে? এ বিষয়ে অনেক দিন ধরে দলের বিভিন্ন ফোরামে কথা উঠছে। এবার লন্ডনে জামায়াতের একটি মিটিংয়েও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

জামায়াতের নেতা হতে গেলে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করে তারপর নেতা হতে হয়। প্রথমে দলের কর্মকাণ্ড ও নীতি-আদর্শের প্রতি কেউ একমত হলে তাঁকে ফরম পূরণ করে সমর্থক হতে হয়। পরে তাঁকে কর্মী হতে হয়। কর্মী হিসেবে তাঁকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট কিছু কাজ করতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতে পড়তে হবে। কোরআন তিলাওয়াত শুদ্ধ করতে হবে। তা ছাড়া প্রতিদিন অর্থ বুঝে কোরআন অধ্যয়ন, হাদিস ও ইসলামী বই (অন্তত ১০ পৃষ্ঠা) অধ্যয়ন, সাংগঠনিক কাজের জন্য সময় বরাদ্দ, মাসিক ভিত্তিতে ইয়ানত বা চাঁদা দিতে হবে, প্রতিদিন রিপোর্ট রাখতে হবে, মাসে অন্তত চারটি সাংগঠনিক বৈঠকে অংশ নিতে হবে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় আত্মসমালোচনা করতে হবে। এমন আরও বেশ কিছু বিষয় তাঁকে মেনে চলতে হবে।

অন্তত ছয় মাস যথাযথ নিয়ম মেনে সঠিকভাবে রিপোর্ট রাখার পাশাপাশি রুকন সিলেবাসের প্রায় ৮০টি বই পড়া সম্পন্ন হলে তাঁকে রুকন হিসেবে শপথ পড়ানো হবে। এর আগে তাঁকে সততা ও নৈতিকতার পরীক্ষায়ও পাস করতে হবে। তা ছাড়া প্রতি মাসে তাঁকে আয়ের অন্তত ৫ শতাংশ হারে সংগঠনকে দান করতে হবে।

দলের প্রতি পজিটিভ থাকলেও অনেকে এত এত কড়া অনুশাসন ও কঠিন ধাপ পার হয়ে দলে ঢুকতে চান না। কিছুদিন আগে জামায়াতের পক্ষের আলেম মাওলানা কামাল উদ্দিন জাফরীও এ বিষয়ে জামায়াতকে একটু ছাড় দেওয়ার পরার্শ দেন। তিনি তখন কথাটা মূলত আলেমদের দলে ভেড়ানোর বিষয়ে মত দিতে গিয়ে এ কথা বলেছিলেন। তিনি মনে করেন, আলেমদের বড় একটি অংশ দলের নানা বিধিনিষেধের কারণে দলে ঢুকতে পারছেন না। তাঁদের জন্য দলের নিয়মনীতি শিথিল করা উচিত।

সম্প্রতি লন্ডনে বিষয়টি আবারও আলোচনায় এল। সেখানে জামায়াতের ওই মিটিংয়ে এক তরুণের নাম উত্থাপন করে প্রশ্ন তোলা হয়, তাঁর মতো কেউ যদি দলে আসতে চায়, তাহলে জামায়াত কি দলের নিয়মনীতি শিথিল করবে?

যাঁর নাম উত্থাপন করে এই প্রশ্ন তোলা হয় তাঁর নাম তারেক আহমেদ। খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী এই তরুণ জামায়াতের প্রতি সফট। গত ৪ জানুয়ারি তিনি ফেসবুকে এ বিষয় নিয়ে একটি পোস্ট দেন।

পোস্টে তারেক আহমেদ লেখেন, ‘লন্ডন জামাতের একটা মিটিং-এ আমাকে নিয়ে আলোচনা হইসে।’

প্রসঙ্গটা এ রকম, ‘তারেকের মতো কাউকে যদি জামাত দলে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, যারা হয়তো জামাতের প্রতি পজিটিভ কিন্তু জামাতের সব নিয়মনীতি মেনে চলবে না। একই সাথে বিভিন্ন স্টেপ পার হয়ে হয়তো দলে থাকতে চাইবে না। সে ক্ষেত্রে জামাতের করণীয় কী? আমরা তাদেরকে কিভাবে স্পেস দিতে পারি?’

তারেক লেখেন, ‘খুবই পজিটিভ চিন্তা। যদিও আমি এসবে নাই। বাট বিষয়টা ভালো লাগসে। দল বড় করতে হলে তাদের কিছু বৈচিত্র্য আনা দরকার। সবচেয়ে ভালো লাগসে খবরটা কেউ আমারে গর্ব করে বলল।’