বিএনপি একটা অভাগা দল!

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০১:০৫ পূর্বাহ্ণ
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০১:০৫ পূর্বাহ্ণ

রেজাউল করিম রনি

বুঝতে হবে…

বিএনপি একটা অভাগা দল। সে কোনদিন যোগ্য বিরোধী দল না পাওয়াতে নিজের রাজনীতির বিকাশ ঘটাতে পারে নাই।

এতাদিন ফাইট করছে চরম পিচাশ, ও লেডি ফেরাউনের দল লীগের সাথে। যার সাথে ফাইট করার জন্য গায়ে গু মেখে নামা ছাড়া উপায় নাই। ফলে ১৫ বছর মাইর খাইছে। লোকজন তাকে গান্ধিবাদি দল বলেছে। কারণ- ভায়োলেন্ট মুভমেন্ট তার রাজনীতির তরিকা না। ২৪ কিন্তু নন ভায়োলেন্ট মুভমেন্ট ছিল। মানুষ মাইর খাইছে। অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ শুরু করে নাই। ইট মারছে। গ্রুপ মিলে মরমে মরতে আগাইছে, তারপরে ধরতে পারলে পিটাইছে শত্রুকে। তাতে হয়তো কেউ কেউ মারা গেছে। তবে সেটা খুবই কম। এক তরফা ভাবে ছাত্র-জনতা মরেছে। যাহোক।

এখন বাজারে আসছে নতুন মাল। তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান – টাইপের অবস্থা। জামায়াতকে বিএনপি কোন দিনও নিজের প্রতিদ্বন্দী মনে করে না। করতে পারবে না। কেন না জামায়াত এক ধরণের পলিটিক্যাল ইসলামিস্ট মানে মডারেট ইসলামিস্ট দল।

প্রপার ক্যাডার বেউজড সংগঠন। বিএনপির সাথে তার আদর্শগত কোন সিমিলারিটি নাই। কাজের ধরণেরও কোন মিল নাই। এবং উভয়েই কমন ভিকটিমহুডের বন্ধনে আবদ্ধ। প্রচুর জামায়াতপন্থি বিএনপি আছে। প্রচুর বিএনপিপন্থি-জামায়াত আছে। বিএনপি ক্ষমতায় আসলেও জামায়াতের হাতে ৩০ ভাগ ক্ষমতা থাকবে। কিন্তু জমায়াত একশ ভাগ ক্ষমতা নিতে গেলে তার হাতের ফাঁক দিয়ে সব বের হয়ে যাবে। জিরো হয়ে যাবে দ্রুতই। সুবিধা পাবে পরীক্ষিত শত্রুরা। ঠিক এটাই পলিসি এখন।

রাজনৈতিক চরিত্রগত দিক থেকে জামায়াত ও লীগ অনেক জায়গায় কিছুটা কাছাকাছি হলেও বিএনপি একদমই আলাদা। ফলে তার প্রতিপক্ষ হিসেবে এই দুইটাই বিএনপির জন্য আনফিট। (পরে এটা নিয়ে আরও লম্বা আলাপ করবো ইনশাল্লাহ।)

বিএনপি একটা লিবারাল ডেমোক্রেটিক দল। জনভিত্তি ছাড়া তার আর কোন সম্পদ নাই। এক শ্রেণীর নেতা-কর্মীরা দলের ভোট কমানোর মেশিন হিসেবে কাজ করে। তারপরেও দলটির উদার মনোভাব। চালাকি না করা। ভুল করে আবার স্বীকার করা। জনগনকে আশ্বস্ত করে। কিন্তু তার লিবারাল অবস্থাকে দুর্বলতা মনে করে। তাকে আরও কর্নার করে ফেলার চেষ্টা করা হলে বিএনপি বদলে যেতে বাধ্য হবে। লিবারাল থেকে তাকে দেশ রক্ষার প্রয়োজনে র‌্যাডিকেল ডেমোক্রেট হয়ে উঠতে হবে তখন। আর এটা হলে দেশের অবস্থা হবে কেরাসিন। আপনারা মোর সেকুলারাইজড হয়ে কিছুটা সুফল পাচ্ছেন। কিন্তু আপনাদের পজিশন নিয়ে জনগনের মধ্যে আস্থা তৈরি হয় নাই। ফলে এটার সুযোগে বিএনপিকে খেলে দেয়ার চেষ্টা করলে- খেলার নিয়মই কিন্তু পাল্টে যেতে পারে। সেটা আপনার জন্য চরম বিপদের কারণ হবে।

উদাহরণ হিসেবে বলি-

আপনি সব কিছুতে নিয়ন্ত্রণ নেয়ার প্রচেষ্টা করলে, বিএনপি যদি মাঠে জামায়াতকে মোকাবেলায় যেতে বাধ্য হয় । জামায়াতের ও দেশেও বিনাশ হয়ে যাবে। লীগ স্পেস পাবে সাময়িক ভাবে।

আর বিএনপি যদি এক সাথে লীগ ও জামায়াত দুইটাকেই আউট করার কঠিক-জটিল গেইমে রাজি হয়ে যায় তার হয়তো আরও ৩ থেকে ৫ বছর লাগবে কিন্তু দুইটারেই সে সাইজ করে ছাড়তে পারবে। সেকুলার ও ইসলামী দুই তরফে নতুন মিত্র তাকে সহযোগীতা করতে এগিয়ে আসবে এই মিশনে। (এটা এখন দেশের জন্য ভায়াবল না। কিন্তু অসম্ভব না)

(নিচের আলোচনায় ( ১ম কমেন্টে দেয়া) তা বিস্তারিত বলেছি।)

এখানে জাস্ট একটা উদাহরণ দেই:

জামায়াতের সাথে সাথে একই দিনে বিএনপি যদি মাঠে ৪ দফা কর্মসূচি দেয়:

১. হাসিনাকে ফেরত দিতে হবে ভারতকে।

২. সন্ত্রাস- চাাঁদাবাজ যে দলেরই হোক দ্রুত বিচারের আওয়তায় আনতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা আদালতে এদের বিচার করতে হবে দ্রুত।

৩. জিনিস-পত্রের দাম কমাতে হবে।

৪. ঘুষ ছাড়া চাকরী ও নিয়োগের সিন্ডিকেট ভাংতে হবে। সরকারী-বেসরকারী চাকরীতে দলীয় প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে।

– এই চারটা দাবি জনগনের বেশি দরকার নাকি জামায়াতের দাবীগুলা বেশি দরকারী? কোনটার সাথে জনগন বেশি কানেক্টট হবে? দলে কানা সমর্থকরা বাদে। সাধাণ জনগনের দিক থেকে বিচার করলে দেখবেন জামাতের রাজনীতি জাস্ট করপুরের মতোন উবে যাবে এই পয়েন্টে। নির্বাচরে আগেই কিক আউট হয়ে যাবে সাধারণ মানুষের মন থেকে।

বাংলাদেশের সামাজে এখনও আওয়ামী ধারা মূল ধারা। তারা সরকারীভাবেও প্রভাশালী। এখনও শাহবাগী ধারা প্রধান ধারা। সাংষ্কৃতিক ভাবে আমরা এখনও মাইনরিটি। এমন অবস্থায় বিএনপি-জামায়াতের মুখোমুখি অবস্থান কেবল ডারতেই সুবিধা দিতে পারে। এটাই তারা চাইছিল অনেক দিন থেকে।

ফলে শত ভাগ বিরোধীতার রাজনীতি আপনাদের জন্য আত্মঘাতি হবে এখন। আপনার এই অবস্থানের সাথে চৌকশ শিবিরের একটা অংশকে আপনি পাবেন না। আপনি যদি নিজেকে এখন খুব বড় কুতুব মনে করেন তাইলে ভুল করবেন। আপনি বড় নন কিন্তু আপনার শতত্রুরা আপনাকে বড় করে দেখাচ্ছে। যাতে আপনি আবারও বড় ভুল করেন। আরও কঠিন বিপদে পড়েন। দেশকে বিপদে ফেলার দায়ে আপনি আরও পিছায়ে যেতে পারেন। যারা আপনাদের উস্কাচ্ছে তারা অতীতে যেমন আপনাদের ক্ষতি করেছে। এখনও আপনাদের ক্ষতি না শুধু এবার ধ্বংস করার মেগা প্রকল্পে নিয়োজিত আছে। ডিম ফোটার আগেই আপনি বাচ্চা গনে ফেলছেন। আপনার শক্তি আপনাকে দিন দিন দুর্বল করছে।

মাঠে না। সোফায় বসেন। আলাপ করেন। নির্বাচন করে, জনগনের ভোটে যা আসন পান তাই নেন। এবং পরে সবাই মিলে জাতীয় সরকার টাইপের আদলে সরকার গঠন করেন। দেশকে পুনঃগঠন করেন। ৫ বছর এক সাথে সবকিছু ঠিক করেন। নিজেদের স্টেবল করেন। দেন প্রতিযোগীতা কইরেন।

ফেসবুক থেকে ।