৬ জন আমার সাথে উপদেষ্টা হওয়ার জন্য যোগাযোগ করেছিল : আসিফ নজরুল

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫ ০৪:২৬ অপরাহ্ণ
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫ ০৪:২৬ অপরাহ্ণ

শুক্রবার মধ্যরাতে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক এবং আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, গত বছর উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত হওয়ার পর ছয়জন ব্যক্তি তার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছিলেন উপদেষ্টা হওয়ার আগ্রহ নিয়ে। তাদের বেশিরভাগই ছিলেন টক-শোতে নিয়মিত আলোচক বা সাংবাদিক।

ড. আসিফ নজরুল লেখেন, তিনি তাদের ভদ্রভাবে জানান যে, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন এই পর্ষদে নতুন কাউকে যুক্ত করা হয় কেবল বিশেষ প্রয়োজন হলে এবং সেটিও ছাত্র উপদেষ্টাদের সম্মতিতে। “স্যার খুব প্রয়োজন না হলে নতুন কাউকে নিতে চান না,”—এ মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি বোঝান, প্রক্রিয়াটি সীমিত ও বাছাইপ্রক্রিয়াধর্মী।

তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে চারজন অভিজ্ঞ পেশাজীবীকে উপদেষ্টা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়—যেমন অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও ফয়জুল ভাই। এরপর আবরার ভাই, আকিজ বশির ভাই ও ফারুকী নামের তিনজন তরুণকেও দলে নেওয়া হয়। তারপর পরিষ্কার সিদ্ধান্ত হয়, আর কাউকে পর্ষদে যোগ করা হবে না।

তবে উপদেষ্টা হতে না পারা কয়েকজন বিষয়টি ভালোভাবে নেননি। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপদেষ্টাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন—কে কী অবদানের ভিত্তিতে নির্বাচিত হলেন, তারা জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে কোথায় ছিলেন ইত্যাদি।

এর জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, “আমি জানি এটা সম্ভবত আমাকে উদ্দেশ্য করে বলা না। কারণ শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে নাগরিক সমাজের দু’একজন ছাড়া কেউ আমার মতো নিরবচ্ছিন্নভাবে আন্দোলনে ছিল না কিংবা প্রতিবাদ করেনি।”

তিনি পরিষদে থাকা অন্য উপদেষ্টাদের ভূমিকারও উল্লেখ করেন। যেমন, রিজওয়ানা, ফরিদা আপা, শারমীন আপা সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে ছিলেন; শাপলা হত্যাকাণ্ড ও গুমের প্রতিবাদ করায় আদিল ভাই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, “সমাজে হয়তো আরও যোগ্য মানুষ আছেন, কিন্তু অনেকেই নীরব ছিলেন কিংবা নিজেই উপদেষ্টা হতে চাননি—যেমন শহীদুল ভাই।”

তিনি লেখেন, “আমরা অধিকাংশ প্রচণ্ড পরিশ্রম করি ও প্রবল ডেডিকেশন নিয়ে কাজ করি। শুধুমাত্র ফেসবুক বা টক-শোতে দুটো কথা বলার ভিত্তিতে কাউকে উপদেষ্টা বানানো হয়নি।” তার মতে, ভবিষ্যতের সরকারগুলো নাগরিক সমাজ থেকে কাউকে দায়িত্বে নিতে হলে আরও কঠিন যাচাই-বাছাই করবে।

পোস্টের একপর্যায়ে তিনি নিজের ব্যক্তিজীবনের কথাও শেয়ার করেন। ফুলার রোডের দিনগুলো কতটা শান্তিময় ছিল—সকালের আকাশ, জানালা দিয়ে গাছ দেখা, রাস্তায় হাঁটা, বাচ্চাদের গল্প শোনা—এসব স্মৃতিই তাকে টানে। লেখার শেষটায় তিনি বলেন, “অপেক্ষায় আছি কবে ইচ্ছে হলেই লিখতে আর বলতে পারবো সেই জীবনে ফেরত যাবো।”