রাজনীতিতে পুরাতন এক ব্যারিস্টারের নতুন ষড়যন্ত্র

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫ ০১:২৫ পূর্বাহ্ণ
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫ ০১:২৫ পূর্বাহ্ণ

নির্বাচনের মৌসুম সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের কাছে ১৪৭টি নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। কিন্তু এই তালিকায় রয়েছে এমন অনেক দল, যাদের সদস্য সংখ্যা ১০ জনও হতে পারে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর পেছনে শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা নয়, বরং বৃহত্তর একটি নির্বাচনী ছক আঁকা হচ্ছে যেখানে দলীয় শক্তির চাইতে ‘সংখ্যার দাপট’ই বড় হয়ে উঠবে।

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত জাতীয় নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। একাধিক সূত্র বলছে, ক্ষমতার মসনদে ফেরার স্বপ্ন দেখা শক্তিগুলোর সামনে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এমনও আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, নিবন্ধন পাওয়া ছোট ছোট দলগুলোর একটি অংশকে ব্যবহার করে নির্বাচন বয়কটের নামে একটি সংঘবদ্ধ জোট গঠন করা হতে পারে—যা দেশে অস্থিরতা ও রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্ম দিতে পারে।

এ প্রসঙ্গে একটি ইন্টারেস্টিং পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বিশ্লেষক জুলকারনাইন সায়ের। তিনি মনে করেন, অতীতের মত এবারও অদৃশ্য কিছু শক্তি সক্রিয় হয়েছে, যারা পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার অপচেষ্টায় ব্যস্ত। এই প্রক্রিয়ায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি নাম উঠে এসেছে—একজন ব্যারিস্টার, যিনি শেখ হাসিনা সরকারের দুই মেয়াদে মন্ত্রী ছিলেন।

এই ব্যারিস্টার ২০১৪ সালের ‘বির্তকিত’ নির্বাচনের আগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে সিএমএইচে ‘জোরপূর্বক’ পাঠানোর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করার ক্ষেত্রে এই ব্যারিস্টার মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। এক সময় এরশাদ নিজেই এই ব্যক্তিকে ‘বেইমান’ আখ্যা দিয়েছিলেন।

চমকপ্রদ বিষয় হলো, ৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় যখন অধিকাংশ সাবেক আওয়ামী মন্ত্রী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন কিংবা আত্মগোপনে আছেন, তখন এই ব্যারিস্টার ছিলেন চুপচাপ, ঝামেলাহীন ও নেপথ্য সক্রিয়তায় ব্যস্ত। বরং সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর আশেপাশে নতুন একটি ‘রাজনৈতিক বলয়’ তৈরি হচ্ছে বলেও অনেকে মন্তব্য করছেন। এর পেছনে রয়েছে পরিচিত কিছু মুখ, রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ছায়া-সমর্থনও।

আরও আলোচিত বিষয় হলো, এই ব্যারিস্টারের কন্যা সম্প্রতি দেশের একটি বেসরকারি ব্যাংকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন—যা বিভিন্ন মহলে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, “সকল ঘাটের পানি খাওয়া” এই ব্যারিস্টার আবারও সক্রিয় হচ্ছেন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে, ভিন্ন পরিচয়ে।

দেশের রাজনৈতিক মাঠে আগামী দিনে এই ব্যক্তির ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে, সেটি নিয়ে এখনই স্পষ্ট কিছু বলা না গেলেও, পরিস্থিতির গতি-প্রকৃতি বলে দিচ্ছে—পুরনো খেলোয়াড়রা আবারও মাঠে নামছেন, নতুন জার্সি পরে।