কেন খালেদের টকশোতে দেখা যায় না পিনাকীকে ?

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫ ১১:১৪ অপরাহ্ণ
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫ ১১:১৪ অপরাহ্ণ

প্রধান প্রতিবেদক

বাংলাদেশের রাজনৈতিক মিডিয়া পরিমণ্ডলে খালেদ মুহিউদ্দিন একটি পরিচিত মুখ। তাঁর সঞ্চালনায় পরিচালিত রাজনৈতিক আলোচনার টকশোটি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় শো হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে চলমান। দেশের নীতিনির্ধারক রাজনীতিবিদ, ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক ভাষ্যকারদের এই টকশোতে প্রায়ই দেখা যায়। কিন্তু খালেদের টকশোতে কখনোই দেখা যায়নি পিনাকী ভট্টাচার্যকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব,অনেকের কাছে জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী এই রাজনৈতিক ভাষ্যকার অনলাইন জগতে বর্তমানে বেশ আলোচিত একজন ব্যক্তি । আবার অনেকেই তো মনে করেন, বর্তমান সময়ের সবচেয়ে তীক্ষ্ণ বক্তাদের একজন পিনাকী। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে—এই আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রে থাকা মানুষটিকে কেন কখনোই দেখা যায় না খালেদ মুহিউদ্দিনের টকশোতে?

এই প্রশ্ন শুধু একজন-দু’জনের নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে একটি ধারাবাহিক ‘জনপ্রশ্ন’। প্রতিটি পর্বের কমেন্ট সেকশনে অসংখ্য দর্শক প্রায় নিয়মিতভাবেই লেখেন:
“পিনাকীকে ডাকেন”, “সবাই এলো, তিনি এলেন না কেন?”, “এই আলোচনা পূর্ণ হতো পিনাকী থাকলে”।

অনেকেই মনে করেন, ‍টকশোটির সঞ্চালক এবং প্রযোজক ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। কেউ আবার বলেন, পিনাকী নিজেই হয়তো টকশোটিতে অংশ নিতে চান না বা রাজনৈতিক কারণে নিজেকে দূরে রাখেন। কিন্তু বিষয়টি স্পষ্ট নয়, আর এ থেকেই জন্ম নিচ্ছে জল্পনা, প্রশ্ন ও তর্ক।

অনেকেই মনে করেন, গণমাধ্যমগুলো সচেতনভাবেই নির্দিষ্ট ধারা বা মতাদর্শের বক্তাদের প্রাধান্য দিয়ে থাকে। সেই জায়গা থেকেই পিনাকীর অনুপস্থিতিকে অনেকে দেখেন একধরনের ‘নির্বাচনী অন্তর্ভুক্তি’র প্রমাণ হিসেবে।

অপরদিকে, কারও কারও মতে, বিষয়টি শুধুই পেশাগত বা ব্যক্তিগত—হয়তো পিনাকী নিজেই এমন আলোচনায় অংশ নিতে আগ্রহী নন, কিংবা সঞ্চালকের সাথে তাঁর কোনো পূর্বপটভূমির টানাপড়েন রয়েছে।

এদিকে সদ্য ঈদের পর খালেদ মুহিউদ্দিন এর একটি ছবি শেয়ার করে পিনাকীকে তার সমালোচনাও করতে দেখা যায়

একজন গণমাধ্যম পর্যবেক্ষক বলেন,“গণমাধ্যমের দায়িত্ব হলো সব ধরনের মতামতকে জায়গা দেওয়া। যদি একজন প্রভাবশালী সমালোচক নিয়মিত বাদ পড়ে থাকেন, তাহলে সেটি হয় প্রশ্ন তুলবে, নয়তো সন্দেহ জন্মাবে।”

তিনি আরো বলেন, “পিনাকী ভট্টাচার্যের বক্তব্য অনেক সময় বিতর্ক তৈরি করে ঠিকই, কিন্তু বিতর্কই তো গণমাধ্যমের প্রাণ। একটি ভারসাম্যপূর্ণ আলোচনা তখনই পূর্ণ হয়, যখন ভিন্ন মতের মানুষজন মুখোমুখি হন।”

এই আলোচনায় খালেদ মুহিউদ্দিন এখনো প্রকাশ্যে কোনো ব্যাখ্যা দেননি কেন পিনাকী ভট্টাচার্য তাঁর আলোচনায় অনুপস্থিত। তবে অনেক দর্শকের মতে, তিনি যদি স্বাধীনভাবে অনুষ্ঠান পরিচালনা করে থাকেন, তবে এমন একটি জনপ্রিয় কণ্ঠকে আমন্ত্রণ জানানো থেকে বিরত থাকার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যার দাবি রাখে।

অন্যদিকে, কেউ কেউ বলছেন, মিডিয়ার নিজস্ব স্বাধীনতাও থাকতে হবে—সঞ্চালকের পছন্দ, শোর ধরণ কিংবা প্রযোজনার কৌশল অনুযায়ী তিনি যাঁকে প্রয়োজন মনে করবেন, তাকেই ডাকবেন—এটাই স্বাভাবিক।

পিনাকী ভট্টাচার্যের অনুপস্থিতি হয়তো কারও কাছে কাকতালীয়, কারও কাছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।