রাজনীতিতে ছাত্রদের নতুন দখলদারি!

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ

দেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে ছাত্রদের নেতৃত্বে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই দলের আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে। তবে, বিএনপি এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল এক বক্তব্যে বলেন, “সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রচেষ্টা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে সরকার নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করার কৌশল হিসেবে এই উদ্যোগকে ব্যবহার করছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদলের সংঘর্ষ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আসন্ন ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নতুন ছাত্র সংগঠন গঠনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এই সংগঠনের সামনের সারিতে থাকবেন আবু বাকের মজুমদার, আবদুল কাদের, রিফাত রশীদ, হাসিব আল ইসলাম, তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী ও জাহিদ আহসান প্রমুখ। তাদের দাবি, শিক্ষার্থীদের স্বার্থরক্ষায় এই নতুন সংগঠন গঠন করা হচ্ছে। তবে, বিএনপি এই উদ্যোগকে সন্দেহের চোখে দেখছে।

সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি নতুন রাজনৈতিক দলের উত্থানের ফলে রাজনৈতিক মেরুকরণ আরও তীব্র হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ মনে করেন, “বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের ছাত্ররা রয়েছেন, ফলে সংঘাত আরও বাড়তে পারে।”

বিএনপির সন্দেহ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

বিএনপির নেতারা মনে করছেন, নতুন দল গঠনের মাধ্যমে মূলত তাদের রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের ভাষ্য, নির্বাচন দ্রুত অনুষ্ঠিত হলে বিএনপি জয়ী হবে—এটি বুঝতে পেরেই নির্বাচনী প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার কৌশল হিসেবে নতুন দল গঠনের আয়োজন করা হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির এই উদ্বেগ অপ্রয়োজনীয়। তাঁদের মতে, বিএনপির মতো বৃহৎ রাজনৈতিক দলকে এ ধরনের ছাত্র সংগঠনের ওপর অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই। তবে, তারা এটাও বলছেন যে এই পরিস্থিতি দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

আগামী দিনগুলোতে নতুন দলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া দেশের রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।