সালাহ উদ্দিন শুভ্র ।।।
সিরাজ সিকদারকে লাল সন্ত্রাস হিসাবে পাবলিকলি পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন মহিউদ্দিন আহমেদ।
লাল সন্ত্রাস ট্যাগ দিয়ে ইন্ডিয়ান স্টাবলিশমেন্ট মাওবাদীদের চিহ্নিত করত। কারণ মাওবাদীরা সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করার কথা বলত। শ্রেণি শত্রু খতমের নামে প্রচুর সন্ত্রাস ভারত অঞ্চলে মাওবাদীরা করেছে। বাংলাদেশেও খুনাখুনি হয়েছে।
তবে সিরাজ সিকদার এই ইন্ডিয়ান মাওবাদ থেকে বের হয়ে মূল মার্ক্সবাদ অবলম্বনে বাংলাদেশ ভূখণ্ডকে ব্যাখ্যা ও এর বৈপ্লবিক পরিবর্তনের তত্ত্ব হাজির করেছেন।
তার প্রচুর টেক্সট আছে এবং তিনি একজন তাত্ত্বিক। তার তত্ত্বের লাইন সন্ত্রাসের না।
বাংলায় তিনি এক বিরল রাজনৈতিক প্রতিভা।
সোভিয়েত লেনিন বা কিউবান ফিদেল তার নিজের দেশ এবং কন্টিনেন্টে যে সাপোর্ট পেয়েছেন, তার বিপরীত ছিল সিরাজ সিকদারের পরিস্থিতি। তার চারিদিকে ছিল শুধু শত্রু। তখন পাকিস্তান উপনিবেশও ছিল। ফলে অনেকটা আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে কাজ করলেও, সিরাজ সিকদারের লেখালেখি প্রকাশ্য বিপ্লবের কথা বলে।
বাংলাদেশে সিরাজ সিকদার নিজে সন্ত্রাস করেছেন এমন ঘটনা মহিউদ্দিন আহমেদের বইয়ে আছে কি না জানি না।
তবে সিরাজ সিকদারকে সন্ত্রাস হিসাবে হাজির করে ইতিহাসে ভারতীয় পারপাস সার্ভ করেছেন মহিউদ্দিন। সিরাজের ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধিতাকে তিনি সন্ত্রাসের লাইন হিসাবে দেখাতে চেয়েছেন। সিরাজ দরদি হলে তিনি লিখতেন ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মূল সৈনিক সিরাজ।
সিরাজ নিজেই শেখ সন্ত্রাসের শিকার। কিন্তু মহিউদ্দিন আহমেদ শেখ সন্ত্রাস নামে কোনো বই লিখবেন না।
সিরাজ যথাযথভাবে বুঝতে পেরে ছিলেন যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে লুটেরা শ্রেণি ও ভারতীয় আধিপত্যের কবল থেকে মুক্ত করতে হবে। আর মহিউদ্দিন আহমেদের জাসদ ভারতের নিজের হাতে তৈরি।
সিরাজকে মহিউদ্দিন সন্ত্রাস হিসাবে হাজির করে তার রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চেয়েছেন।
লেখক : সাংবাদিক ও কথা সাহিত্যিক ।