নিজস্ব প্রতিবেদক ।।।
নিজের সদ্য সাবেক প্রতিষ্ঠান বার্তা সংস্থা এএফপির প্রশ্নের মুখে এবার পড়তে হয়েছে শফিকুল আলমকে। ” বাংলাদেশের বিপ্লবী শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন ফিকে হয়েছে বেকারত্বে ” এমন একটি শিরোনামে ঢাকা থেকে করা একটি প্রতিবেদন এএফপির বরাতে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ঠাই পেয়েছে।
সেই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বন্দুকের সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করেছে শিক্ষার্থী। কিন্তু এই বিপ্লবের ছয় মাস পার হওয়ার পরই অনেক শিক্ষার্থী বলছেন, বাধার দেয়াল ভেঙে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেয়ে যেন একটি চাকরি খুঁজে পাওয়া আরও কঠিন।
তবে অনেকে মনে করছেন প্রতিবেদনটি এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যেখানে তরুণেরা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের সরকারকে ব্যর্থ বলছে। কিন্তু তরুণদের একাংশ মনে করছেন, একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস এর সরকার দায়িত্ব ঘাড়ে নিয়েছেন। এই অল্প সময়েই এত বিশাল বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মস্থানের জন্য যথেষ্ট সময় নয়। তাছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়া বাংলাদেশে একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া।
সরকার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন নিয়োগের পদ্ধতিগত সংস্কারে কাজ করছে। এবং শূন্য পদগুলোতে দ্রুত নিয়োগ দেওয়ার কাজও শুরু করছে।
ঠিক এমন সময় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ড. ইউনুসের সরকারকে মোটা দাগে ব্যর্থ চিহ্নিত করার এই সংবাদটি উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন দেখা গেছে।
প্রতিবেদনটিতে ব্যর্থতা এবং হতাশার কথা থাকলেও সরকার নতুন নতুন কর্মস্থানের জন্য যে উদ্যোগ গ্রহণ করছে এবং সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে এই বিষয়ে এমন একটা উল্লেখ নেই।
এএফপির বরাতে, যে সকল গণমাধ্যম সংবাদটি প্রকাশ করেছে তারা প্রতিবেদনটির শেষের দিকে লিতুলে ধরেন ,” ফিন্যান্সে স্নাতক শেষ করা সুবীর রায়ের মতো কাউকে কাউকে আবার সরকারি চাকরিতে মনোনীত করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই তা আবার বাতিলও করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। আমার বাবা আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানোর জন্য ছোট একখন্ড জমি বিক্রি করেছিলেন…এখন আমি খালি হাতে বাড়ি ফিরছি। বাবার সঙ্গে আমি ধানক্ষেতে যোগ দেব। “
এই অংশটির নিয়েও প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে জুলাই আগস্ট এর ছাত্র আন্দোলনের সাথে থাকা অনেককে। তারা বলছেন, ” প্রতিবেদক এখানে এমন একজনকে তুলে এনেছেন যাতে করে বহিঃবিশ্বে সংখ্যালঘু নির্যাতনের যে অতিরঞ্জিত সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে, সেটিকে স্টাবলিশ করা হয়েছে।”
এই সংবাদে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের। তিনি বলেন, কর বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই কর সংগ্রহ করে সরকার জনখাতে বিনিয়োগ করবে। এতে বিপুল সংখ্যক চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হবে।
তিনি আরও বলেন, আগের সরকার ডুবন্ত অর্থনীতি রেখে গেছে। তাই রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি নিশ্চিত করা অগ্রাধিকারে আছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যোগদানের পূর্বে দীর্ঘদিন শফিকুল আলম এএফপিতে কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি এএফপির ঢাকা ব্যুরো প্রধান ছিলেন। তিনি এ পদ ছাড়ার পর ব্যুরো প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান প্রথম আলোর রিপোর্টার শেখ সাবিহা আলম।