দ্য পলিটিশিয়ান ডেস্ক :
দীর্ঘ ১৭ বছরের কারাবাস শেষে মুক্ত হয়ে বিএনপির সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সোজা চলে গেলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর প্রাঙ্গণে। সেখানেই নেতাকর্মীদের সাথে আবেগঘন মুহূর্তে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
বৃহস্পতিবার কেরাণীগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বাবরকে অভ্যর্থনা জানাতে আগে থেকেই সেখানে জড়ো হয়েছিলেন পরিবারের সদস্য এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা। বেলা পৌনে ২টায় কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তিন ঘণ্টার যাত্রায় তিনি শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবর প্রাঙ্গণে পৌঁছান।
কবর প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাবর বনানীতে মা-বাবার কবর জিয়ারত করেন। পরে অসুস্থ শরীর নিয়ে গুলশানের বাসার পথে রওনা হন।
কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান পরে সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের অত্যন্ত প্রিয় সহকর্মী যিনি ১৭ বছরের বেশি সময় কারাগারের অন্ধকুঠিরে জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং যিনি উচ্চ আদালতের রায়ে নিরাপরাধ প্রমাণিত হয়ে মুক্ত হয়েছেন। আমাদের সেই প্রিয় সহকর্মী লুৎফুজ্জামান বাবরকে নিয়ে আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করেছি।
“বাবর যখন কারাগারে যান, তখন টগবগে যুবক ছিলেন। তাকে মিথ্যা অভিযোগে অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় কারাগারে আবদ্ধ রাখা হয়েছে। প্রায় ৬ বছর তাকে কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। এই নিপীড়ন, এই অনিশ্চিত জীবন…দুইটি মামমলায় মৃত্যুদণ্ড, একটি মামলায় যাবজ্জীবন…এই দুশ্চিন্তা, মিথ্যা অভিযোগের কারণে যে ক্ষোভ বেদনা এটা তাকে বৃদ্ধ করে ফেলেছে।”
নজরুল ইসলাম বলেন, “লুৎফুজ্জামান বাবর বিএনপির নিবেদিত নেতা। তিনি খুব অসুস্থ। এই অবস্থাতেও তার ঘরে পরিবারের কাছে না গিয়ে তিনি এসেছিলেন তার নেতা, আমাদের নেতা শহীদ জিয়ার মাজার জিয়ারত করতে।”
২০০৭ সালের ২৮ মে সেনা-নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেপ্তার হওয়া বাবরের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বিভিন্ন মামলায় দুইটি মৃত্যুদণ্ড এবং একটি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় হয়েছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উচ্চ আদালতের রায়ে তিনি সবগুলো মামলায় খালাস পান।
২০০১-২০০৬ সালে খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বাবর নেত্রকোণা-৪ আসন থেকে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
বাবরের মুক্তি বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দের সঞ্চার করেছে। তবে দলীয় নেতারা তার শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।