বন্ধুদের সঙ্গে স্মৃতির জগতে মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫০ অপরাহ্ণ
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫০ অপরাহ্ণ

দ্য পলিটিশিয়ান রিপোর্ট :

শৈশব আর কৈশোরের স্মৃতি কি ভোলার মতো? বিশেষ করে যদি সেই সময়গুলো কাটে খেলাধুলা, আড্ডা আর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে মেতে। সময়ের চাকার ঘূর্ণনে অনেকেই হয়তো দূরে চলে গেছেন, কিন্তু যখনই দেখা হয়, তখন স্মৃতির পাতায় ভেসে ওঠে সেই পুরোনো দিনের কথা। বুধবার ঠাকুরগাঁও শহরের জগন্নাথপুর এলাকায় হাওলাদার হিমাগার চত্বরে এমনই এক স্মৃতিময় মিলনমেলা বসেছিল।

বয়সে প্রবীণ—কেউ ৭৫, কেউ ৮০, আবার কেউ কেউ ৯০ ছুঁই ছুঁই। শৈশব-কৈশোরের সঙ্গীরা একত্র হয়েছিলেন হাসি-ঠাট্টা, গান আর আড্ডার মাঝে হারিয়ে যেতে। সেই দিনের মধ্যমণি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সকাল সাড়ে ১০টা। কুয়াশার চাদর সরিয়ে সূর্যের উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ছিল শহরজুড়ে। এমন সময় জগন্নাথপুর এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন ঠাকুরগাঁও শহরের প্রবীণরা। কেউ এসেছেন নিজে নিজে, কেউ আবার অন্যের হাত ধরে। তাদের অভ্যর্থনায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মির্জা ফখরুল। একে একে এসে জড়ো হলেন তাঁর বন্ধুরা—অধ্যাপক মনতোষ কুমার দে, আনিসুল হক চৌধুরী, আফিজুর রহমান, ইউনুস আলী চৌধুরী। পরে যোগ দেন বলরাম গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক চৌধুরী মো. হুমায়ুন, বিশ্বনাথ দে ধারাসহ আরও অনেকে।

দ্রুতই জমে ওঠে আড্ডা। আলোচনায় উঠে আসে শৈশবের দুষ্টুমি, কৈশোরের দুরন্তপনা আর তরুণ বয়সের আবেগঘন মুহূর্ত। কারও হাতে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ, কারও হাতে শীতের পিঠা। হাসির ফোয়ারা ছুটে চলেছে, আর তার মাঝেই কেউ সেলফি তুলে ধরে রাখছেন মুহূর্তগুলো।

পাশেই বাজছিল গান:
‘পুরোনো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়…’
গানের সুর যেন আরও গভীর করে তুলছিল স্মৃতির আবেশ।

আড্ডার ফাঁকে মির্জা ফখরুল শোনালেন শৈশবের এক মজার ঘটনা। বললেন, ‘আমার বন্ধু গোফরানের সঙ্গে খুব দুষ্টুমি করতাম। সে রাগ করে সব সময় রুস্তম আলী হেড স্যারকে নালিশ করত। স্যার আমাদের লাইন করে দাঁড় করিয়ে বেত মারতেন। কিন্তু আমাদের বন্ধু আফিজুর তো ছিল অন্যরকম। তার মুখে সব সময় হাসি থাকত। স্যার যখন তাকে বেত মারলেন, তখনো সে হাসল। স্যার আরও রেগে গিয়ে বারবার মারলেন। শেষে বেত ফেলে দিয়ে আফিজুরকে বুকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন।’

এই ধরনের স্মৃতিচারণ শুধু অতীতকে নয়, বর্তমানকেও সমৃদ্ধ করে। শৈশব আর কৈশোরের বন্ধন সময়ের সঙ্গে বদলায় না। আড্ডার মাঝেই যেন সবাই ফিরে গেলেন সেই পুরোনো দিনে।

দিন শেষে একে অপরকে বিদায় জানিয়ে যখন বাড়ি ফিরছিলেন, তখনো কারও মুখে হাসি, কারও চোখে জল। সবার মনে একটাই কথা, ‘স্মৃতিরা বেঁচে থাকুক, ফিরে আসুক বারবার।’