খালেদা জিয়া ও দিগন্ত টেলিভিশনের বিষয়ে যা লিখেছেন মুহাম্মদ কামরুজ্জামান

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৫:২৫ অপরাহ্ণ
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৫:২৫ অপরাহ্ণ

দ্যা পলিটিশিয়ান ।।।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা মুহাম্মদ কামরুজ্জামান তার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার আগে ফাঁসির সেল থেকে “ফাঁসির সেল থেকে দেখা বাংলাদেশ” নামে একটি স্মৃতিচারণ মূলক বই লিখেন।

সেই বইয়ের একটি অংশে তিনি, জামায়াতে ইসলামীর গণমাধ্যম, দিগন্ত টিভির অনুমোদন, ও আর একটি টেলিভিশন অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার মনোভাবের বিষয়ে তার স্মৃতিচারণগুলো তুলে ধরেছেন।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বইয়ে লিখেন,চারদলীয় জোট সরকার গঠনের পর থেকেই আমি চেষ্টা করেছিলাম, অবাধ ও নিরপেক্ষ সংবাদ প্রবাহের জন্য বেসরকারি পর্যায়ে কিছু পত্রিকা ও স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল গড়ে তুলতে উৎসাহিত করতে। আমি যেহেতু নিজে এ ব্যাপারে আগ্রহী ছিলাম, তাই নিজে থেকেই উদ্যোগ নিয়েছিলাম। জেলাপর্যায়ে আঞ্চলিক পত্রিকা প্রকাশের ব্যাপারেও আমি উৎসাহিত করি এবং বেশ কয়েকটি জেলায় আমাদের সমমনা অনেকেই কয়েকটি পত্রিকা প্রকাশ করেন।

মীর কাসেম আলী একটি বড়ো কাজ করেন নয়া দিগন্ত নামে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করে। আমি এতে খুবই আনন্দিত হই। এজন্য বাইরে থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা সম্ভব, আমি তা করেছি। তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় অভিজ্ঞ মীর কাসেম সাহেব দলীয় প্রভাবমুক্ত বাণিজ্যিকভাবে সফল একটি জনপ্রিয় অথচ সুস্থ সংবাদপত্র উপহার দিতে সচেষ্ট ছিলেন। আমি মনে করি, এ ব্যাপারে নয়া দিগন্ত সূচনা থেকেই সফল হয়েছে।

একটি নতুন পত্রিকা প্রথম দিন তিন লক্ষাধিক সার্কুলেশন নিয়ে প্রকাশিত হওয়া এবং প্রথম কাতারের ২-৩টি পত্রিকার মধ্যে শামিল হওয়াটা নিঃসন্দেহে সাফল্যের দাবি করতে পারে।

ব্যক্তিগতভাবে নতুন পত্র নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করতে গিয়ে কোনো দিক থেকে সহযোগিতা না পেয়ে আমি খানিকটা বিক্ষুব্ধ ও হতাশ ছিলাম। জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে জামায়াতের যাবতীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে আমাকে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে সময় দিতে হয়েছে। জামায়াতের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক যোগাযোগের মতো জটিল দায়িত্বটাও আমার ওপর ছিল। ওদিকে সাপ্তাহিক সোনার বাংলা-র সম্পাদনার দায়িত্ব ছিল আমার ওপর।

এটি জামায়াতের দলীয় মুখপত্র হলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদনের কারণে পত্রিকাটির ভালো সার্কুলেশন ছিল। বলা যায় সাপ্তাহিক পত্রিকা হিসেবে সর্বোচ্চ প্রচারসংখ্যার অধিকারী পত্রিকাটি। ফলে পত্রিকার মান ও গ্রাহক ধরে রাখার জন্য আমাকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হতো।

জামায়াতের নেতাদের অনেকেই মনে করতেন, যেহেতু সোনার বাংলা দলীয় মুখপত্র, কাজেই পত্রিকাটিতে জামায়াত নেতাদের বড়ো বড়ো দাবি ও খবর ছাপাতে হবে। পুরো সপ্তাহে জামায়াত একটি বড়ো দল হিসেবে যেসব কর্মসূচির আয়োজন করত, তাতে এই পত্রিকার ১২ পৃষ্ঠায় সংকুলান করাও কঠিন ছিল।

বিশেষ করে প্রথম পাতায় রাজনৈতিক বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদনের পরিবর্তে জামায়াতের খবর বা ছবি দলের নেতাদের চাহিদা মোতাবেক প্রকাশ করা কঠিন হতো। জামায়াতের শীর্ষ পর্যায় থেকে এসব ব্যাপারে আমার বিরুদ্ধে অনেক সময় অভিযোগ করা হয়েছে এবং অসন্তুষ্টিও প্রকাশ করা হয়েছে। যেসব খবর ছাপার জন্য অথবা কোনো জনসভায় ভাষণের পূর্ণ বিবরণ ছাপার জন্য চাপ দেওয়া হতো, তা হয়তো-বা কদিন আগেই জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় ছাপা হয়েছে ।

সোনার বাংলা-র সার্কুলেশন যেহেতু বেশি, তাই জামায়াত নেতাদের অনেকেই চাইতেন, তাদের ভাষণের পূর্ণ বিবরণ যেন সোনার বাংলা-য় ছাপানো হয়। ওদিকে দৈনিক পত্রিকায় আগেই প্রকাশিত হওয়ার কারণে ওসব খবরের প্রতি পাঠকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলতেন।

সোনার বাংলা-র পাঠকদের পক্ষ থেকে আপত্তি আসত পুরোনো খবর এত বিস্তারিতভাবে ছাপানো প্রসঙ্গে। সাংবাদিকতার ছাত্র হিসেবে আমার কাছেও ব্যাপারগুলো ছিল বিব্রতকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত। তা ছাড়া বাংলাদেশে দলীয় পত্রিকার সাফল্য সম্পর্কে বরাবরই আমার সংশয় ছিল। আজাদ টেকেনি। ইত্তেহাদ টেকেনি। দেশ টেকেনি। দৈনিক জনতাও অগ্রসর হতে পারেনি বা দৈনিক সংগ্রামও ভালো করতে তথা গ্রাহক-পাঠক আকৃষ্ট করতে পারছে না ।

আমার একটা আকাঙ্ক্ষা ছিল যে, সবাই যেন একটি মানসম্মত পত্রিকা হিসেবে সাপ্তাহিক সোনার বাংলা হাতে নেয়। দল ও পাঠকদের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে আমি হিমশিম খাচ্ছিলাম। যাহোক, বলা যায় শেষ পর্যন্ত দলেরই বিজয় হয়েছে। যদিও সোনার বাংলা-য় রাজনৈতিক প্রতিবেদন ও কলাম প্রকাশনা অনেক সংগ্রাম করে অব্যাহত রেখেছে। ফলে পত্রিকাটির গ্রাহক সংখ্যা দিনদিন বেড়েছে এবং পাঠক ধরে রাখতে এখনও সক্ষম হচ্ছে।

জামায়াতের সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে আমি আবার কেন একটি সাপ্তাহিক নতুন পত্র ব্যক্তিগত মালিকানায় প্রকাশ করতে গেলাম, এ প্রশ্ন তোলা হলো। একটি ম্যাগাজিন সাইজ সাপ্তাহিক পত্রিকার ডিক্লারেশন নিয়ে তা প্রকাশের চেষ্টা করছি—এ কথাটি আমি তদানীন্তন জামায়াতের আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমকে জানিয়ে রেখেছিলাম। ফলে সংশ্লিষ্ট অভিযোগ থেকে রক্ষা পেলাম বটে; কিন্তু কারও সহযোগিতা পেলাম না ।

আমার ইচ্ছা ছিল, মাত্র ৬ টাকায় ২৪ পৃষ্ঠার একটি ম্যাগাজিন যায় যায় দিন- এর মোকাবিলায় নতুন প্রজন্মের হাতে তুলে দেবো। সাম্প্রতিককালে যায় যায় দিন পত্রিকাটি পরকীয়া ও নানা অবৈধ-অশালীন প্রেমকাহিনি ছেপে আমাদের নতুন প্রজন্মের চরিত্রকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছিল। এ কারণে যায় যায় দিন- এর হাত থেকে নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করার একটি তাগিদ অনুভব করছিলাম। ভিন্ন স্বাদের এবং স্বপ্ন দেখার মতো উদ্দীপনামূলক কোনো কিছু সামনে না দিয়ে যায় যায় দিন-এর সমালোচনা করে তো কোনো লাভ নেই আবেগের আতিশয্যে আমি আলাদা অফিস নিয়ে পত্রিকাটি প্রকাশ শুরু করে দিলাম।

বিদেশে থাকা কয়েকজন বন্ধুর কাছ থেকে পত্রিকায় বিনিয়োগ করার জন্য কিছু আর্থিক সহায়তা নিলাম এবং নিজের পক্ষ থেকে কিছু বিনিয়োগ করলাম। এমন একটি পত্রিকা প্রকাশের জন্য প্রবাস থেকে অনেকে উৎসাহিত করেছিলেন। প্রবাসে দায়িত্বপালন করেন এমন একজনকে কিছু পত্রিকার কপি দিয়ে পরে জানতে পারলাম, তিনি ওসব নিয়ে যাননি।

পত্রিকাটি প্রকাশের পর জামায়াতের দায়িত্বশীলদের সৌজন্য কপি বণ্টন করার জন্য অফিসের একজন পিয়নকে দিই। সে আমার সম্পাদনায় একটি নতুন পত্রিকা বের হয়েছে দেখে উৎসাহের সাথে তা বিতরণ করে। তাকে পত্রিকাটি বিতরণ করতে দেখে জামায়াতের একজন বড়ো দায়িত্বশীল ধমক দিলে বেচারা কেঁদে ফেলে।

বেশ পরে আমি ঘটনাটি জানতে পারি। অথচ জামায়াত অফিসে এ ধরনের অনেক পত্রিকা ও বই সৌজন্য হিসেবে আসে এবং তা অফিসের সহকারী বা পিয়ন যারা থাকে, তারাই নেতাদের টেবিলে টেবিলে বিতরণ করে থাকে। এই ঘটনায় আমি একেবারে হতভম্ব হয়ে যাই। পত্রিকাটি বাজারজাত করার জন্য সহজাত যে চ্যানেল ছিল, তা আমার পক্ষে ব্যবহার করা সম্ভব হলো না। অনেকেই এটাকে আমার ব্যক্তিগত ব্যবসা মনে করেছেন। অথচ পত্রিকায় বিনিয়োগ করে ঝুঁকি নিতে যাবেন, এমন বোকা লোক কজনই-বা পাওয়া যাবে। ব্যবসা করতে হলে তো আরও অনেক লাভজনক ব্যবসা আছে।

একদিন অধ্যাপক গোলাম আযম নতুন পত্র সম্পর্কে খোঁজখবর নিলেন। আমি সব খুলে বললাম। তিনি বললেন—‘এতসব দায়িত্ব পালন করে তুমি ওটা চালাবে কীভাবে? লোকসান বেশি হওয়ার আগেই প্রয়োজনে বন্ধ করে দাও।’ শেষ পর্যন্ত প্রায় আট লাখ টাকা লোকসান দিয়ে আমি পত্রিকাটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হই। আমি পরাস্ত হয়ে গেলাম। যাদের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়েছিলাম, তাদের জানালাম। তাদের মধ্যে একজন নাছোড়বান্দার টাকা ক্রমান্বয়ে পরিশোধ করলাম। জানানোর পর দুইজন মেনে নিয়েছেন। অন্য একজন কিছু বলেননি; তবে লিখিত কাগজটি তার কাছে রেখে দিয়েছেন।

আমার চিন্তা ছিল, মিডিয়ার দিক থেকে আমাদের একটি সামর্থ্য অর্জন করতে হবে। আমি নিজেও এ ব্যাপারে লিখিতভাবে প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছি, যাতে মিডিয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব প্রদান করা হয়। আমি নিজেও একটি স্যাটেলাইট চ্যানেলের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে একটি দরখাস্ত জমা দিলাম তথ্য মন্ত্রণালয়ে। শামসুল ইসলাম সাহেব ছিলেন তথ্যমন্ত্রী এবং ব্যারিস্টার হায়দার আলী ছিলেন তথ্য সচিব। বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান ছিলেন শামসুল ইসলাম সাহেব। তার সাথে বেশ দীর্ঘদিনের পরিচয় আমার। তা ছাড়া জামায়াতের লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য হিসেবে আমরা অনেক বৈঠক করেছি একসাথে। বলা যায় একটা ভালো সম্পর্ক আছে।

দরখাস্ত দেওয়ার পর শামসুল ইসলামের সাথে সাক্ষাৎ করলাম। তিনি জানালেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলে ব্যবস্থা করবেন। তিনি আমাকে বলেন, আমি যেন নিজেও প্রধানমন্ত্রীকে বলি। সামগ্রিক পরিস্থিতির ব্যাপারে আমার কিছু পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ দিই।

আমার উদ্যোগে HTV- Horizontal Television-এর জন্য একটি লাইসেন্স দেওয়ার ব্যাপারটা নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতে কথা বললে তিনি আমার কাছে বিস্তারিতভাবে শোনেন। আমার পরিকল্পনা শুনে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন—“ঠিক আছে, তথ্যমন্ত্রীকে বলবেন।’ একদিন তথ্যমন্ত্রীকে আমার উপস্থিতিতেই তিনি বলেন—‘কামারুজ্জামান যে টিভি চ্যানেলের কথা বলছে, তা দিয়ে দেন।’ তথ্যমন্ত্রী শামসুল ইসলাম বললেন—‘তারা তো দুইটা টিভির লাইসেন্স চেয়েছেন।’ সেদিনই আমি জানলাম, দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশন দিগন্ত টিভি নামে একটি দরখাস্ত করেছে। আমি দিগন্তের দেড় বছর আগে দরখাস্ত করেছিলাম ।

টিভির অনুমোদনের জন্য সবার আগে আমি দরখাস্ত করেছিলাম। আমার দরখাস্তের একটি কপি হারিস চৌধুরীকে দিয়েছিলাম। এরপর আরও বেশ কয়েকটি দরখাস্ত বিএনপির কারও কারও পক্ষ থেকে করা হয়। বলা যায়, সরকারের তৃতীয় বছরে এসে প্রধানমন্ত্রী যখন আমার লাইসেন্স দিতে বললেন, তখন তথ্যমন্ত্রী শামসুল ইসলাম দিগন্তের দরখাস্তটার কথা বলে একটা সমস্যার সৃষ্টি করলেন। দিগন্তের জন্য অন্যদিক থেকেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আদেশ করা হয়েছে। তথ্যমন্ত্রী যদি বাধার সৃষ্টি না করতেন, তাহলে দুটোরই অনুমোদন
হয়ে যেত।

এরপর তথ্যমন্ত্রী শামসুল ইসলাম আমাকে বললেন—‘আপনার নেতা অর্থাৎ জামায়াতের আমীর বিদেশে আছেন, তিনি ফিরে এলে তার সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ আরও এক মাস চলে গেল। এরপর একদিন আমাকে আমাদের সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদ সাহেব ডেকে পাঠালেন। তিনি বললেন—‘মীর কাসেম দরখাস্ত করেছে, তুমিও করেছ। কিন্তু সরকার তো একটা দেবে। তুমি ও মীর কাসেম মিলিতভাবে কাজটা করো।’ এ ব্যাপারে আমি দ্বিমত করলাম। এরপর আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আমাদের আমীর ও সেক্রেটারি জেনারেল সম্ভবত পরামর্শ করে মীর কাসেম সাহেবের দরখাস্তটি বিবেচনা করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিলেন। এ কারণে সত্যি কথা বলতে আমি ভীষণ কষ্ট পাই ও বিক্ষুব্ধ হই। তবে মীর কাসেম ভাই যদি একটি টিভি চ্যানেল করেন, তাহলে তাতেও আমার উদ্দেশ্য সাধন হবে। অর্থাৎ, আমি যে উদ্দেশ্য নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলাম, মীর কাসেম ভাইও তা-ই করতে চান, এটাই ছিল আমার সান্ত্বনা ।
মুজাহিদ ভাই এটাও জানান—‘মীর কাসেমের আর্থিক সংগতি ভালো এবং এ বিষয়টিও বিবেচনা করা হয়েছে।’ আমার স্বপ্ন ভঙ্গ হলো। তবে দিগন্ত টিভি চালু হওয়ায় আমি অনেক বেশি খুশি হয়েছিলাম।