দ্য পলিটিশিয়ান ডেস্ক:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপির উত্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড এবং তার পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁক ছিল। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর একটি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।
তখনকার রাজনৈতিক শূন্যতা ও একদলীয় শাসনের বিরোধিতা করে জিয়া “বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ” ধারণা সামনে আনেন। তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি জাতীয় ঐক্য, ধর্মীয় সহনশীলতা, এবং স্বাধীনতার চেতনার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে।
বিএনপি ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে ২১৯টি আসনের মধ্যে ২০৭টি আসনে বিজয়ী হয়। এটি দলটির জন্য ছিল এক বড় সাফল্য। এই বিজয়ের মাধ্যমে বিএনপি দেখিয়ে দেয় যে তারা জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম।
জিয়াউর রহমানের শাসনকাল ছিল রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের সময়। কৃষি ও শিল্প খাতে তার নেওয়া নানা উদ্যোগ, যেমন ‘মহিলা পুনর্বাসন প্রকল্প’, ‘সেচ ব্যবস্থা উন্নয়ন’, এবং ‘মাইক্রো ক্রেডিট প্রকল্প’ উল্লেখযোগ্য। তবে, ১৯৮১ সালে চট্টগ্রামে এক সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি নিহত হন, যা বিএনপির জন্য বড় একটি ধাক্কা ছিল।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিএনপির নেতৃত্বে আসেন তাঁর স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ১৯৯১ সালের নির্বাচনে নেতৃত্ব দেন এবং দলটি বিপুল বিজয় অর্জন করে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে পার্লামেন্টারি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন।
বিএনপির উত্থান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। প্রতিষ্ঠার সময় থেকে আজ অবধি দলটি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে।